মানুষ ভোট দিতে চায়-মির্জা ফখরুল

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪
  • 9 Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন,  দেশের মানুষ ভোট দিতে চায়। এজন্য পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। কারণ দেশের মানুষ চায়, আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেবো। ভোটের মাধ্যমে পছন্দমতো প্রতিনিধি নির্বাচন করে বৈষম্যমুক্ত দেশ গড়তে। গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার এ দেশের গণতন্ত্র, বিচার ব্যবস্থা, রাজনীতি ও অর্থনীতিসহ সকল কাঠামো ধ্বংস করে দিয়ে নিজেরা লুটপাট করেছে।বলেছেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যদিয়ে তাদের পতন ঘটিয়ে আমরা সকলে মিলে বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্য নোবেল বিজয়ী ড. মো. ইউনুসের নেতৃত্বাধীন বর্তমান অন্তবর্তী এ সরকারকে সমথর্ন দিয়েছি। তাই এ সরকারের নিকট আমাদের প্রত্যাশা নির্বাচন কেন্দ্রীক সংস্কারগুলো দ্রুত সম্পূর্ণ করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় তারা প্রয়োজনীয় ভূমিকা পালন করবেন।

বুধবার বিকাল ৫টার দিকে ফেনীর ছাগলনাইয়া আদালত মাঠে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা এ সরকারকে পুরোপুরি সমর্থন করব বলেছিলাম। তিন মাসে আশা করেছিলাম সংস্কার শেষে সরকার নির্বাচনি রোডম্যাপ দেবেন। এ দেশ কীভাবে চলবে, তা ৩১ দফার মাধ্যমে বহু আগেই আমরা তুলে ধরেছি। যত দ্রুত নির্বাচন দেবেন, জাতির জন্য মঙ্গল। দেরি হলে সমস্যা বাড়বে। এজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে পরামর্শ নিন।

ভোটের মাধ্যমে পছন্দমতো প্রতিনিধি নির্বাচন করে বৈষম্যমুক্ত দেশ গড়তে আওয়ামী লীগ ভারতে বসে ষড়যন্ত্র ও জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু এ দেশের জনগণ আর কোনো ফ্যাসিবাদ, আধিপত্য মেনে নেবে না।
বিএনপির আন্দোলন শেষ হয়নি উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের আন্দোলন শেষ হয়নি। জনগণের অধিকার, ভোটাধিকার, বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারলে, দেশের অর্থনৈতিক ভারসাম্য ও বৈষম্যমুক্ত দেশ গড়তে পারলেই এ আন্দোলন শেষ হবে।
তিনি বলেন, এ দেশকে যা কিছু দিয়েছে তা বিএনপিই দিয়েছে। ১৯৭৫ সালে আওয়ামী লীগ বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল। তখন তা টিকিয়ে রাখতে পারেনি। জিয়াউর রহমান এসে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি নতুন করে অর্থনৈতিক ও সংবাদ মাধ্যমকে মুক্ত করেছিলেন। তারপর তাকে হত্যা করে এরশাদ চেষ্টা করেছিল দেশকে ধ্বংস করার। কিন্তু খালেদা জিয়ার আপোষহীন নেতৃত্বের কারণে তাতেও তারা ব্যর্থ হয়েছেন।
দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বিএনপি নেতাকর্মীদের অবদানের কথা তুলে ধরে দলের মহাসচিব বলেন, এ দেশের গণতন্ত্রের জন্য অনেক প্রাণ দিতে হয়েছে। এবারের আন্দোলনেও ফেনীর অনেককে হত্যা করা হয়েছে। বিগত বছরে আওয়ামী লীগ আমাদের ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। ২০ হাজারের মতো নেতাকর্মীকে হত্যা ও ৭০০ নেতাকর্মীকে গুম করেছে। এখনো সন্তান ও বাবাহারা মানুষজন স্বজনদের ফেরার অপেক্ষা করছেন। আমরা মামলা নিয়ে কারাগারে গেছি কিন্তু মাথা নত করিনি। এ সংগ্রামের মাধ্যমে আজ ফ্যাসিবাদমুক্ত দেশ ও স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়াকে পরাজিত ও ধ্বংস করার জন্য এরশাদ ও আওয়ামী লীগ অনেক চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সবার দোয়ায় আল্লাহর রহমতে তাকে পরাজিত করতে পারেনি। তিনি অনেক বেশি অসুস্থ। আমরা তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর চেষ্টা করছি।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক ও ফেনী-১ আসনের সাংগঠনিক সমন্বয়ক রফিকুল ইসলাম মজনুর সভাপতিত্বে আয়োজিত এ জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীমসহ দলটির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
বিএনপি চেয়ারপারর্সনের নিজ নির্বাচনী এলাকা ফেনী-১ সংসদীয় আসনের সমন্বয়ক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি রফিকুল আলম মজনুর সভাপতিত্বে ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির গ্রাম সরকারবিষয়ক সম্পাদক বেলাল উদ্দিন এবং সদস্য আবু তালেবের যৌথ সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম ও জয়নাল আবদীন ভিপি, বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, ঢাকা মহানগর দক্ষিন সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম প্রমুখ।
এর আগে একইদিন দুপুরের দিকে জেলার ফুলগাজী উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে দলটির চেয়ারপার্সন ও সাবেক তিন তিনবারের প্রাধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পৈতৃক বাড়ির আঙ্গিনায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ ও ঢেউটিন বিতরণ  অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন  দীর্ঘ  ১৫ বছরের জঞ্জাল ৩ মাসে পরিষ্কার করা সম্ভব না।অন্তবর্তী সরকার প্রধান ড. ইউনুস বিশ্বের কাছে একজন গ্রহণযোগ্য  মানুষ। তার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার এর মধ্যে বেশকিছু সংস্কার কাজ করছেন।এরপরই খুব দ্রুত সময়ের মাঝে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার গঠিত হবে।

এদেশে কারা রাজনীতি করবেন, তা দেশের জনগণই ঠিক করবেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ফেনী-১ আসনের বিএনপির সাংগঠনিক সমন্বয়ক ও ঢাকা মহানগর বিএনপির আহবায়ক রফিকুল ইসলাম মজনুর সভাপতিত্বে ও অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে  উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন প্রমুখ।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *