স্টাফ রিপোর্টার: ফেনীর ছাগলনাইয়ায় এক স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর মনোনয়ন জমাদানে বাধা, মারধর এবং তাকে অপহরণ মামলায় পৌর মেয়র মোস্তফার পিএস মেজবাহ উদ্দিনকে গ্রেপ্তারের পর সোমবার (১১ অক্টোবর) আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। মেজবাহ পরশুরাম উপজেলার দ. বেড়াবাড়িয়া গ্রামের বজলুর রহমানের ছেলে। বৈবাহিক সূত্রে সে ছাগলনাইয়া পৌর এলাকার পূর্ব বাঁশপাড়ায় বসবাস করে। বাড়ি পরশুরামে হলেও ছাগলনাইয়ায় মেয়রের পিএস পরিচয়ে নানা অপকর্ম করে যাচ্ছিল।
মেজবাহ’র হুমকি ধমকি ও দুর্ব্যবহারের শিকার পৌরসভার অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী। বিভিন্ন ব্যক্তিকে ঠিকাদারী কাজ পাইয়ে দেয়া, চাকুরীসহ নানা তদবীরের কথা বলে মেজবাহ মেয়রের নাম ভাঙ্গিয়ে বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে লিপ্ত ছিল। তার অপকর্মে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল পৌর নাগরিকরা। মেজবাহকে ম্যানেজ করা ছাড়া মেয়রের সাক্ষাত অসম্ভব ছিল। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সে হয়ে উঠে ভয়ংকর চাঁদাবাজ।
এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আবদুল হালিমের উপর হামলা, মনোনয়নপত্র ছিনতাই ও তাকে অপহরণের ঘটনায় রবিবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ মেজবাহকে গ্রেপ্তার করে।
ছাগলনাইয়া থানা ও বাদীর মামলা সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২ নভেম্বরের পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দেন আবদুল হালিম। সে লক্ষ্যে ১০ অক্টোবর বিকালে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার জন্য উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হন। মেয়রের পিএস মেজবাহ পূর্বেই একদল সন্ত্রাসী নিয়ে অন্য প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রতিরোধে উপজেলা পরিষদ এলাকায় অবস্থান করছিল। একপর্যায়ে উপজেলা পরিষদ ভবনের সামনের রাস্তার উপর মেজবাহ’র বাহিনী হালিমের পথরোধ করে। এসময় সন্ত্রাসীরা হালিমের উপর হামলা চালিয়ে কিল, ঘুষি, লাথি মেরে তাকে মাটিতে ফেলে দেয়।
সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে তার মাথা ফাটিয়ে দেয়। অজ্ঞাতনামা কেউ একজন হালিমের নমিনেশন পেপার ও আনুষাঙ্গিক কাগজপত্রাদি ছিনিয়ে নেয়। পরে সন্ত্রাসীরা তাকে অপহরণ করে একটি সিএনজিতে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। সন্ধ্যা প্রায় সাড়ে ছয়টার সময় তাকে বাড়ির সামনে ফেলে সন্ত্রাসীরা চলে যায়। থানা পুলিশ সংবাদ পেয়ে তাকে উদ্ধার করে ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে চিকিৎসা প্রদান করে।
ছাগলনাইয়া থানার ওসি শহীদুল ইসলাম জানান, মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। আসামীকে আটকের পর আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় মেয়রের সম্পৃক্ততা থাকলে তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে।
মেয়র মোস্তফা জানান, মেজবাহ তার কাজকর্ম করে। তবে এ হামলার সাথে সে জড়িত নয়। স্বতন্ত্র প্রার্থীকে মারধর, মনোনয়নপত্র ছিনিয়ে নেয়া ও অপহরণের ঘটনায় তার কোন সম্পৃক্ততা নেই।
Leave a Reply