ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা চেয়ারম্যান সোহেল চৌধুরী দলের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে অবশেষে মিজানুর রহমানকে সমর্থন জানালেন। দীর্ঘ ১০ বছরে ভালো ব্যবহার ও আচার আচরণ দিয়ে তিনি দলীয় নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষের কাছে প্রিয় হয়ে উঠেছিলেন।
বিশেষ করে ফেনীর সাংবাদিকদের ভালো বন্ধু ও আপনজন ছিলেন তিনি। উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে গিয়ে এক আবেগঘন ফেসবুক স্ট্যাটাস লিখেছেন সোহেল চৌধুরী। পাঠকদের জন্য তার লিখাটি হুবহু তুলে ধরা হলো:-
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
প্রিয় ছাগলনাইয়া উপজেলাবাসী এবং আমার প্রাণ প্রিয় আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, আসসালামু আলাইকুম।
আপনারা জানেন, আমি বিগত ১০ বছর ধরে ছাগলনাইয়া উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। পাশাপাশি ছাগলনাইয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করছি। এ দীর্ঘ সময়ে দলকে সুসংগঠিত করা ও উপজেলার সকল নাগরিকের সুখ-শান্তি, নিরাপত্তা, উন্নয়ন ও সম্মানজন বসবাসের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা ও তা ধরে রাখতে নিরলসভাবে কাজ করেছি।
এ দীর্ঘ সময়ে ছাগলনাইয়া উপজেলার প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারী দপ্তর, গ্রাম-পাড়া মহল্লা, হাট-বাজার থেকে উপজেলা সদর ও পৌরশহর পর্যন্ত আমার দলের নেতাকর্মীসহ সকল সন্ত্রাসী ব্যক্তি ও গোষ্ঠির বিরুদ্ধে জিরু টলারেন্স নীতি অবলম্বন করেছি। মাদক, চাঁদাবাজিসহ সমাজে কোন ধরণের অশান্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি না হয়, যাতে আমার উপজেলার মা-বোন ও সাধারণ নাগরিকের নিরাপদ বসবাসের পরিবেশ নষ্ট না হয়, সেই দিকে সবসময় প্রাধান্য ছিল এবং কঠিনভাবে নজরে রাখতে চেষ্টা করেছি ।
ছাগলনাইয়া উপজেলায় দল-মত নির্বিশেষ আমার প্রতিটি সাধারণ জনগণ ইজ্জত-সম্মানের সঙ্গে এক ছাতার নিচে মিলেমিশে বসবাস করতে পারে, সেই পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্যই আমি সংগ্রাম করেছি।
ব্যক্তি,গোষ্টি,ব্যবসায়ী,পেশাজীবীসহ সর্বস্তরের মানুষের মাথা উচু করে সসম্মানে বসবাসের জন্য দলের প্রতিটি নেতাকর্মীদের নিয়ে কাজ করেছি।
আমার প্রাণ প্রিয় আওয়ামীলীগ,মহিলা আওয়ামীলীগ,ছাত্রলীগ,যুবলীগসহ সহযোগী সংগঠনের প্রতিটি নেতাকর্মীকে আমার পরিবারের সদস্য হিসেবে আমি জেনে আসছি।
আমি সব সময় সকল উপজেলাবাসী এবং আমার দলের নেতাকর্মীদের সম্মান, সুন্দর ও সফলতা কামনা করেছি। জাতীয় রাজনীতিক প্রেক্ষাপটের কথা বাদ দিলে, আমি অন্যায়ভাবে অন্যকোন রাজনীতিক দলের নেতাকর্মীদের হয়রানি ,নির্যাতন কিংবা ক্ষতি করিনি।
আমার দলের নেতাকর্মীদের দ্বারা যাতে অন্যকোন রাজনীতিক দলের নেতাকর্মী, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ নষ্ট না হয়, সেটাকে সবসময় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেখেছি। নিরাপরাধ উপজেলাবাসীর উপর যেকোন ধরণের অমানবিক আচরণের বিরুদ্ধে আমি সবসময় সোচ্চার ছিলাম। দশ বছর উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন কালে আমি কখনো দল কিংবা ব্যক্তির চেয়ারা দেখে সালিশ দরবার করিনি।
চেষ্টা করেছি দলমত নির্বিশেষ ন্যায় বিচার বাস্তবায়ন করতে । আমি কতটুকু ভালো-মন্দ করেছি তা উপজেলাবাসী আপনারাই সাক্ষি। আমি দিন-রাত আমার দল ও উপজেলাবাসীর জন্য নিরলসভাবে কাজ করেছি। তারপরও মানুষ হিসেবে আমি ভুলের উর্দ্বে নই । আমার রাজনীতিক ও সামাজিক জীবনে চলার পথে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
প্রিয় ছাগলনাইয়া উপজেলাবাসী ও আমাদের প্রিয় সংগঠনের নেতা-কর্মীবৃন্দ, আপনারা অবগত আছেন যে, আসন্ন ছাগলনাইয়া উপজেলা নির্বাচনে আমি চেয়ারম্যান পদে আবারো প্রতিদ্বন্ধিতা করার ঘোষণা দিয়েছি।
আমার আহ্বানে আপনারা দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ উপজেলাবাসী আপনার আমার প্রতি যে আন্তরিকতা, ভালোবাসা ও সম্মান দেখিয়েছেন তা আমি অবগত আছি। কিন্তু একটি কথা মনে রাখতে হবে, ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়। জাতির জনকের হাতে গড়া বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে দিচ্ছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। আমাদের এই ফেনী জনপদে আওয়ামীলীগের অভিভাবক শ্রদ্ধেয় আলা উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম মহোদয় এবং প্রিয় নেতা নিজাম উদ্দিন হাজারীর নিদের্শনায় আমি আসন্ন উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, আমি অতীতের মতোই আমার দল ও উপজেলাবাসীর পাশে যেভাবে ছিলাম, বর্তমানেও আছি এবং থাকবো- ইনশাল্লাহ । জয় বাংলা,জয় বঙ্গবন্ধু ।
মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল
চেয়ারম্যান:
ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদ
সাধারণ সম্পাদক:
ছাগলনাইয়া উপজেলা আওয়ামীলীগ
ছাগলনাইয়া, ফেনী (৫-৫-২০২৪)
Leave a Reply